Bangla Choti আজও মনে পরে ১

515 views

একটু তাড়া করেই ছুটাছিলাম। পাছে মেয়েটি দৃষ্টির
আঁড়ালে চলে যায়। বারান্দার ও প্রান্তে
ক্যামিক্যাল ইঞ্জইনীয়ারিং ডিপার্টমেন্ট। বারান্দার রেলিংয়েই বসা
দেখলাম মেয়েটিকে। আমার পা দুটি হঠাৎই থেমে
গেলো। মেয়েটিও এক নজর আমার চোখে চোখে তাঁকালো। আমি
চোখে চোখে কথা বলতে চাইলাম। অথচ, মেয়েটি চোখ সরিয়ে
নিলো।

আমার পা চলতে চাইলো না। তারপরও পা চালালাম ধীর পায়ে।
সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম ঠিকই, মনটা কিছুতেই মানতে চাইলো না। আরেক
নজর মেয়েটিকে খুবই দেখতে ইচ্ছে করলো। আমি আবারো
সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামলাম। মেয়েটির দৃষ্টি আকর্ষন করারই চেষ্টা
করলাম। মেয়েটি আবারো আমার চোখে চোখ রাখলো, তবে চোখ সরালো না। এক
প্রকার সন্দেহজনক দৃষ্টি মেলে
দীর্ঘক্ষণই আমার দিকে তাঁকিয়ে রইলো। আমার হৃদয়টা আনন্দে ভরে উঠলো।
আমিও চোখে চোখে তাঁকিয়ে থাকতে চাইলাম। কেনো যেনো
চক্ষু লজ্জাই আমাকে কাতর করলো। আমি মেয়েটির পাশ কেটে ধীর পায়েই
এগুতে থাকলাম। অপরূপ আভিজাত্যে ভরা একটা চেহারা যেনো হৃদয়ের সাথে
গেথে রইলো। কি নাম মেয়েটির? এমন একটি মেয়েকে যদি জীবন সংগিনী করে
পাই, তাহলে বোধ হয়, জীবনে আর কিছুই চাইনা।

আমার পা চলেনা। আবারো মেয়েটিকে দেখতে মন চাইলো। আমি পেছন
ফিরে তাঁকালাম। অথচ, বারান্দার রেলিং এ কাউকেই চোখে পরলো না।
কোথায় কোনদিকে গেলো কিছুই বুঝতে পারলাম না। বুকটা হু হু করে উঠতে
থাকলো হঠাৎই করেই। মনে হতে থাকলো, এমন একটি মেয়ে এই জীবনে কাছে না
পেলে, জীবনটাই বুঝি অর্থহীন। আমি যেনো নুতন করেই মেয়েটির প্রেমে
পরে গিয়েছিলাম।

সেদিন দুপুর তিনটার দিকেই ক্লাশ শেষ হয়েছিলো। অনেকটা
ক্লান্ত দেহেই মেসে ফিরে চলছিলাম। আগে পিছে অন্য সব ক্লাশ
মেইটারাও আছে। সবাই রিক্সা কিংবা বাস
এর জন্যেই ছুটাছুটি করছিলো।
অপেক্ষা আমার ভালো লাগে না। রিক্সা চড়ে অযথা পয়সা
নষ্ট করার মতো বিলাসীতাও করি না। সময় মতো বাস না পেলে, হেঁটেই
রওনা হয়ে পরি মেসের পথে। দু কিলোমিটার পথ, খানিক কষ্ট হয়, তারপরও
অভ্যাস হয়ে গেছে।

আমি হেঁটে হেঁটেই মেসে
ফিরছিলাম। হঠাৎই পার্কের দিকে চোখ পরেছিলো। অবাক হয়ে
দেখলাম রুমিকে। একটা আবুল মার্কা চেহারার ছেলের পাশে রুমি পার্কে
গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। আমার মনটা তৎক্ষণাত ক্ষত বিক্ষত
হতে থাকলো। আমার পা চলতে চাইলো না। মনটা শুধু আর্ত চিৎকার করতে
থাকলো, না, না, রুমি শুধু আমার! ওরকম কুৎসিত চেহারার
কোন ছেলের সাথে রুমির কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। আমি পার্কের
পাশেই অর্থহীন ভাবে বসে পরলাম। হাতের নোট খতাটা ছুড়ে ফেলে সবুজ
ঘাসের উপরই চিৎ হয়ে শুয়ে পরলাম। এক নজর তাঁকালামও রুমির দিকে।
দেখলাম, রুমি বাম হাতটা মাথার পেছনে ঠেকিয়ে, এক দৃষ্টিতেই আমার
দিকে তাঁকিয়ে আছে। পাশের ছেলেটা আগ্রহ করে অনেক কিছুই বলছে বোধ
হয়। রুমির মনযোগটা সেদিকে ছিলো না। সে আমার দিকেই তীক্ষ্ম চোখে
তাঁকিয়ে থাকলো।

এত সুন্দর চোখ আর এত সুন্দর ঠোট বোধ হয় এই জীবনে
খুব কমই দেখেছি। ঝর ঝরে রেশমী চুলগুলোও খনিকটা হাওয়ায় উড়ছিলো।
আমিও সবুজ ঘাসের উপর কাৎ হয়ে শুয়ে, রুমির দিকে এক দৃষ্টিতেই
তাঁকিয়ে রইলাম। বুঝাতে চাইলাম, আমি তোমাকে ভালোবাসি রুমি। আমি
তোমাকে প্রথম দৃষ্টিতেই ভালোবেসে ফেলেছি।

পাশের ছেলেটিও রুমির দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা
করছিলো। রুমি শুধু মাথা নাড়ছিলো। আর
জোড় করেই যেনো হাসছিলো। কিন্তু চোখ দুটি ঠিক আমার দিকেই করে
রেখেছিলো। আমার মনটা শুধু উদাস হতে চলছিলো।
রুমির ভাব সাব দেখে মনে হলো, ছেলেটির সাথে তেমন কোন
গভীর সম্পর্ক নেই। ছেলেটিও সবে মাত্র রুমির প্রেমে পরে যথাসাধ্য
চেষ্টা করছে রুমিকে প্রেম নিবেদন করতে। আমি চোখের
ভাষাতেই বলতে চাইলাম, ওকে ভালোবেসো না রুমি। তুমি আমার। তোমাকে
আমি রাজ্যের সুখ উপহার দেবো।

রুমির অমনোযোগীতা বোধ হয় ছেলেটিও অনুমান করতে পেরেছিলো।
ছেলেটি ইশারা করলো অন্যত্র যেতে। রুমি যেনো অনেকটা বাধ্যের মতোই
ছেলেটির পাশ ধরে এগুলো। রাস্তার
মোড়টায় গিয়ে, ছেলেটি একটা রিক্সা ডাকলো। দাম দর না করেই উঠে
বসলো রিক্সাতে। রুমিও তার ভারী পাছাটা তুলে ছেলেটির পাশেই
রিক্সায় উঠলো। সে দৃশ্য দেখে আমার মনটা আবারো ক্ষত বিক্ষত হয়ে
উঠতে থাকলো। ভেতর মনটা চিৎকার করে বলতে থাকলো, না
রুমি না, ও ছেলের সাথে যেও না। তুমি আমার, শুধু
আমার।

রিক্সাটা কখন কোনদিকে হারিয়ে গেলো বুঝলাম না। আমি অলস
পায়ে ফিরতে থাকি মেসে।

[ad_2]

Share on Social Media

Shares

Leave a Comment